“বৌরে, আমি সালু, আসামে হুইয়া আছি। কি একখান ইন্জ্ঞেকশন দিলো, ঘুম কি আইবো জ্বলা ধরছে। তুমি আমার লিগা হেলিকপ্টার পাঠাও, আমি চপ্পল পায়ে আসতেছি!” এই বইলা হাসিনা আহমেদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।
সাংবাদিক গুচ্ছ থেকে একজন দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন,” জ্বি ম্যাডাম, স্যার কে কি আলু পোড়া ডিম থেরাপী শেষ কইরা এখন আসাম পুলিশ ইন্জ্ঞেকশন দেয়া শুরু করছে?”
ওমনি হাসিনা বানু হাতের মাইক্রোফোন ছুড়িয়া মারিয়া কহিলো,”ওরে মিনসে, আমার সোয়ামী হাসপাতালে। নিশ্চয়ই তুমি বাকশালী পত্রিকার সাংবাদিক, দূর হ!” বলিয়াই ম্যাডাম নিজেই চলিয়া গেলেন।
এদিকে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে সালাহউদ্দিন পাওয়া গেছে উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র সাথে দুপুরের লান্ঞ্চে বিরিয়ানী দেবে এই লোভে সাংবাদিকগন গেটে ভীড় জমাইলে সবাইকে একখানা কাগজ ধরায়া বিদায় দেয়া হয়। মেজাজ বিলাকৃত সাংবাদিকগন পেট চাপড়াইয়া সেই কাগজে লেখা পড়তে থাকে
বর্তমান আয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে পুরা দেশ ডিজিটাল করতে গিয়া আজকা বিএনপির হারিয়ে যাওয়া নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের ফোনকল পায়। এরদ্বারা ইহাই প্রমানিত হয় বাংলাদেশ আর সেই বাংলাদেশ নাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে দেখা এমুন ডিজিটাল হইছে যে আজ জন গন খালি খালি দেশ থিকা বিদেশ নয়, বিদেশের হাসপাতালের খাটের উপ্রে থিকা দেশেও কথা কইতে পারে যেকুনো সময়। এদিন বিরোধী দল বলিয়া আসতেছিলো সরকার নাকি গুম করে, কিন্তু আজকে সালাউদ্দিন সাহেব ফুন করিয়া ইহাই প্রমান করিলেন যে এই ফুন কল কুনো সাধারন ফুন কল নহে, সকল মিথ্যা ষড়যন্ত্রকে ছুড়ে ফেলে আমাদের জাতির কন্যা গনতন্ত্রের মানসপুত্রী ২৮ ডক্টরেটের ডাক্তার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলাদেশ হইবোই। আমরা অতিশীঘ্র ভারত সরকারের সাথে যোগাযোগ করে তারে অচিরেই ফিরায়া এনে বিরোধী দলের সকল গুম অভিযোগের উচিত জবাব দেয়া হইবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু ঐদিকে গুলশানের ভারত হাইকমিশন আরেক সাংবাদিক সম্মেলন ডাকিয়া ভারতীয় প্রেসসচিব মৌখিক বক্তব্যে বলিয়াছে,”খবর মারফত জানা গিয়াছে কে বা কাহারা অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করিয়া এখানে সেখানে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরিতেছিলো। পরে তাহাকে হাসপাতালে নিয়া গেলে নিজেকে মন্ত্রী বলিয়া দাবীকৃত ব্যাক্তিটির সাথে ঐ এলাকার গরু ব্যাপারীদের সাথে যোগাযোগ থাকতে পারে এই অভিযোগে তাহাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গরু চোরাকারবারীদের কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ আছে কিনা সেই তদন্তের নিমিত্তে পুলিশ জোর জিজ্ঞাসাবাদ পূর্বক তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা লওয়া হইয়াছে। এখন সে পুলিশের হেফাজতে আছে।”
সাংবাদিক গন হাপাইতে হাপাইতে গুলশান আসিয়া কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করিবার পূর্বেই উক্ত প্রেস সচিব বলিলেন,”আজ্ঞে, চারটা তো বেজে গেলো, অফিস ছুটি হইয়া গেলো। আপনাদের প্রশ্ন গুলো লিখে দিয়ে যাবেন, কাল আমি লিখে লিখে জবাব দিয়ে যাবো!”
সাংবাদিকগন গালি মারিবার পূর্বেই আবার তাহাদের ফুনে বার্তা আসিলো,”যে যেখানেই আছেন, র্যাব সদর দপ্তরে আসেন, প্রেস বিজ্ঞপ্তি।”
আবার দে দৌড়। গিয়া দেখে র্যাব মহাপরিচালক মাইক হাতে গান গাইতেছিলো,”আমারও পরান যাহা চায়!” কিন্তু সাংবাদিক দেখিয়া গান বন্ধ হইয়া শুরু করিলো বক্তৃতা,”আমাদের কাছে তথ্য আছে সালাউদ্দিন সাহেব পেট্রোলবুমা আর নাশকতামূলক কাজে সম্পৃক্ত। সুতরাই তাহার বিরুদ্ধে আমরা ৬ টা মামলা দায়ের করছি। সে দেশে আসলেই তার বিরুদ্ধে এসব মামলা শুরু করবো।” এই বলিয়া উঠিয়া চলিয়া গেলেন। সকল সাংবাদিক মুখ আমসি করে পানির কল খুজতে লাগলো চারিদিকে অমনি ফোনে আবারও ম্যাসেজ,”ম্যাডামের ঘুম ভাঙ্গিয়াছে। উনি এখন সংবাদ সম্মেলন করবেন।” এক সাংবাদিক মুখ ফুইটা বইলাই ফেললো,”হালার সালু, এক দিনে এইডার লিগা ৬ ডা সম্মেলন। কই যাই!”
বিএনপি কার্যালয়ে আসতে আসতে অনেক সাংবাদিকের টাকা শেষ, জান শেষ , তাও ম্যাডাম কি বলে সেইটা শোনার জন্য কার্যালয়ের সামনে ভীড় জমাইলো। এমুন সময় গেটের সামনে লুঙ্গি পড়া মাহবুবে আলম আমতা আমতা করতে করতে বললেন,” সালাউদ্দিন সাহেবকে পাওয়া গেছে এইটা বড় কথা না, দেশের ফ্যাসিবাদী সরকার দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে এইটা তারই নমুনা। তাই আগামী কাল থেকে দুই দিন হরতাল।”
এমন সময় সাংবাদিক মহল থেকে চিৎকার কর বললো,”স্যার, কালকা পরশু তো শুক্র শনি।”
মাহবুব আলম হা কইরা শুনার পর আবার বললো,”তাই নাকি? তাইলে চার দিন হরতাল।”
আরেক সাংবাদিক হাত উচা কইরা বললো,”স্যার বর্তমানে আপনে দলের কোন পোস্টে আছেন?”
মাহবুবে আলম মুখ খিচা বললো,”আরে ঘোচু, আমি কি পোস্ট অফিস নাকি? আমি মাহবুবে আলম।” এই বইলা মাহবুবে আলম ঢুকে গেলো সদর দপ্তরে।
এদিকে সাংবাদিকগন বাড়ি যাওনের টাকা নাই এই জন্য নিজ অফিসে ফোন করিয়া জানতে পারিলো দৈনিককার কনভেন্স মাত্র ৪০ টাকা। এর বেশী দেওয়া হইবে না। ইহা শুনিয়া সাংবাদিকগন রাগে দুঃখে জায়গায় বইসা গনঅনশনে গেলো!