‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয়—দেশে এখন ভোট দিতে দিতে মানুষের নাক দিয়ে রক্ত পড়বে!’ – মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, গুলশান
গণতন্ত্র আবারও অস্বস্তিতে পড়ে গেছে—কারণ সে জানে না, আগে নির্বাচন হবে নাকি আগে গণভোট হবে, নাকি আগে রিকশা ভাড়াই বাড়বে। এ অবস্থায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিলেন:
“জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক, অবিবেচনাপ্রসূত—এমনকি বাসায় লবণ শেষ না দেখে বাজারে যাওয়া যতটা বোকামি, ঠিক সেই রকম।”
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তিনি ফাইল উল্টে পাল্টে খুঁজে খুঁজে বললেন,
“এ যে কি সব সংযুক্তি-২, সংযুক্তি-৩… কেউ কি সংযুক্তি-১ নিয়ে গেছে?”
সনদ, সুপারিশ আর রহস্যময় ‘আদেশ’
সরকার নতুন কিছু ‘আদেশ’ দিতে চায়, কিন্তু বিএনপির দাবি—এই আদেশ জারি করার ক্ষমতা সরকারের নেই।
“আইন করতে হলে রাষ্ট্রপতির দরকার, সরকার না। সরকার আইন করলে সেটা আইন নয়, সেটা শুধু গরম খবর।”
দলগুলোর সঙ্গে এক বছর ধরে মিটিং-সেমিনার-চা-সিঙ্গারা-বিস্কুট সব শেষ, আর এখন বিএনপির অভিযোগ—
“ঐকমত্য কমিশনের পুরো কাজটাই নাকি ছিল একটা গ্রুপ স্টাডি প্রজেক্ট—শেষে যার যার ইচ্ছামতো এডিট করে দাখিল দিয়েছে!”
সংবিধান সংস্কার পরিষদ—নতুন সারপ্রাইজ
কমিশন বলছে, নির্বাচনের দিনই আবার একটা সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে।
অর্থাৎ, একজন মানুষ ভোটে জিতে সংসদ সদস্যও হবেন, আবার পরিষদেরও সদস্য—
দু’টো আইডি কার্ড, দু’টো শপথ, দু’টো ফটোসেশন!
বিএনপির প্রশ্ন:
“এক কাজও করে, ভোটারদেরও দুইবার আঙুলের ছাপ নিক—একটা নির্বাচনের জন্য, আরেকটা পরিষদের জন্য!”
গণভোট নিয়ে BNP–র সর্বোচ্চ রাগ
সরকার বলছে, আগে গণভোট হবে, পরে নির্বাচন হবে।
বিএনপি বলছে, আগে নির্বাচন হবে, পরে গণভোট হবে।
জনগণ বলছে, আগে ট্রাফিক জ্যাম কমাও, বাকিটা পরে দেখা যাবে।
ফখরুলের বক্তব্য:
“একটা জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে যা টাকা লাগে, তা দিয়ে পুরো ঢাকায় ওয়াইফাই ফ্রি দেওয়া যায়। এর ওপর আবার গণভোট? মানুষ ভোট দিতে দিতে ক্লান্ত। আঙুলের ছাপ আর স্ক্যান মেশিন দেখে এখনকার মানুষ ভয়ে আঙুল গুটিয়ে রাখে।”
তার প্রস্তাব:
“নির্বাচনের দিনই গণভোট করে ফেল—একই বুথ, একই বায়োমেট্রিক, একই ঝাড়ুর লাঠি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুইটা ঢেউয়ে ভোট দিলে উপকারই, আলাদা আয়োজনের দরকার নেই।”
রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ভিন্নমত’—যা নাকি কেউ শোনেনি
বিএনপির অভিযোগ, দলগুলো যতদিন কথা বলল, তর্ক করল, চা খেলো—শেষে কমিশন নাকি তাদের মতামত ডাস্টবিনে দিল।
“যা বলেছি, তা আর নেই। যা পাইছি, তা আমরা বলিনি!”
এমনকি বিএনপি আবিষ্কার করেছে—চূড়ান্ত সনদের কপি নাকি চুপিসারে এডিট করা হয়েছে।
যে জিনিসে সবাই রাজি ছিল—সেটাও রহস্যজনকভাবে রাতারাতি গায়েব।
“এটা তো যেন বিয়ের আগে কথা হয়েছিল মোরগের মাংস হবে, কিন্তু ভোজে গিয়ে দেখা গেল ডিমের কারি!”
শেষ সতর্কবার্তা
সংবাদ সম্মেলনের একদম শেষে ফখরুল গম্ভীর কণ্ঠে বললেন—
“আমরা আবারও বলছি—অবিবেচনাপ্রসূত সংস্কার প্রয়োগ করলে দেশের গণতন্ত্র বাপ–দাদার বাড়ি চলে যাবে।”
তারপর তিনি যোগ করলেন—
“জাতীয় ঐক্য দরকার, ঝগড়া নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ—ভোট করা, ভোট না করাতে নতুন পরীক্ষা আবিষ্কার করা না।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্য নেতারা নীরবে মাথা নেড়ে বললেন,
“ঠিক কথা। আগে ভোট আসুক, পরে দেখবে কমিশন, সনদ, পরিষদ, যাই হোক।”